নিজ দুয়ারে কড়া নাড়ছে ৩৭তম বিসিএস। এতদিন ধরে যারা বিসিএস ক্যাডার হওয়া স্বপ্ন দেখছেন, তাদের এখন স্বপ্ন বাস্তব করার সময় এসেছে। ১ হাজার ২২৬টি শূন্য পদের জন্য ২৯ ফেব্রুয়ারি এই বিসিএসের বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। আর ৩১ মার্চ থেকে আবেদনপত্র নেয়া শুরু হবে। বিসিএস’-এ অংশ নিতে চাইলে আপনাকে প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই। জানা গেছে, ৩৭তম বিসিএসে এবার ১ হাজার ২২৬টি শূন্য পদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শূন্য পদ থাকছে প্রশাসন ক্যাডারে। আরও জানা গেছে, এই বিসিএসের মাধ্যমে ৩শ’ জন সহকারী কমিশনার নেয়া হবে।
আবেদনের যোগ্যতা : ৩৭তম বিসিএসে আবেদন করতে হলে যে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছরের সম্মান ডিগ্রি থাকলেই আবেদন করা যাবে।
বয়সগত যোগ্যতা : বরাবরেরই মতোই প্রার্থীর বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের ক্ষেত্রে বয়স ৩২ হতে পারবে। সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ক্ষেত্রে শুধু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে বয়স ৩২ হওয়া যাবে।
কোন পদে কতজন নিয়োগ
সাধারণ ক্যাডারে : এবার সাধারণ ক্যাডারে মোট ৪৬৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন ছাড়াও পুলিশ ক্যাডারে ১০০ জন, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২০ জন, সমবায় ক্যাডারে ৯ জন, ডাকে ৯ জন, আনসার ক্যাডারে ৭ জন, নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারে ৭ জন, ইকোনমিক ক্যাডারে ৬ জন, তথ্য ক্যাডারে ৬ জন ও রেলওয়ে ক্যাডারে ১ জন নিয়োগ করা হবে।
প্রফেশনাল ক্যাডারে : প্রফেশনাল ক্যাডারের মধ্যে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের সহকারী সার্জন হিসেবে ২৭২ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন হিসেবে ১৮ জন, মৎস্য ক্যাডারের উপসহকারী পরিচালক হিসেবে ৬৪ জন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে ১৯ জন, কৃষি ক্যাডারে ৫০ জন, বিসিএস পশুসম্পদ ক্যাডারে ৪২ জন, হাঁস-মুরগি উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে ৫ জন, গণপূর্তে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ২৫ জন, সহকারী প্রকৌশলী (ইএম) হিসেবে ১১ জন, রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে ৭ জন, সহকারী বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী হিসেবে ১ জন, সড়ক ও জনপথ প্রকৌশল ক্যাডারে ১২ জন, সহকারী প্রকৌশলী বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারের সহকারী বেতার প্রকৌশলী হিসেবে ৮ জন, খাদ্য ক্যাডারে ২ জন, মৃত্তিকা সম্পদ ইন্সটিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে ১ জনসহ মোট ৫৩৭ জন নিয়োগ দেয়া হবে।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে : এছাড়াও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের মধ্যে প্রভাষক হিসেবে হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনায় ২২ জন, বাংলায় ২১ জন, অর্থনীতিতে ২০ জন, দর্শনে ১৯ জন, ইতিহাসে ১৯ জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ১৮ জন, গণিতে ১৫ জন, ইংরেজিতে ১৪ জন, গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে ১৩ জন, উদ্ভিদবিদ্যায় ৭ জন, কম্পিউটার, ইসলামের ইতিহাস, মনোবিজ্ঞানে ৫ জন করে, ব্যাংকিংয়ে ৪ জন, পরিসংখ্যান, সংস্কৃত ও কৃষিবিজ্ঞানে ৩ জন করে, সমাজকল্যাণে ২ জন, প্রাণিবিদ্যায় ১ জনসহ মোট ২২৪ জন নিয়োগ দেয়া হবে। তবে পদসংখ্যা যে কোনো ক্ষেত্রেই কম-বেশি হতে পারে।
অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া : বিজ্ঞাপন সূত্রে জানা গেছে ৩১ মার্চ সকাল ১০টা থেকে ২ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। বরাবরের মতো এবারও অনলাইনে আবেদন করা যাবে। আর পিএসসির ওয়েবসাইট থেকে ৩৭তম বিসিএসে আবেদনের ফর্মুলা পাওয়া যাবে। আর টেলিটক সিমের মাধ্যমে আবেদনের টাকা জমা দিতে হবে। তবে ছবি, স্বাক্ষর এসব ক্ষেত্রে সবসময় সতর্ক থাকা ভালো। এছাড়াও আবেদনের সময় আপনার সনদে বাবা-মায়ের নাম যেভাবে আছে সেভাবেই সব লিখুন। কোনো কোটা থাকলে সেটি উল্লেখ করুন। কোনো ধরনের ভুল তথ্য লিখবেন না।
বিসিএস পরীক্ষার নম্বর বিন্যাস : ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষায় যারা অংশ নিতে চাচ্ছেন, তাদের হয়তো সবারই জানা আছে নতুন নিয়মে দুই ঘণ্টা সময়ে মোট ১০টি বিষয়ের ওপর ২০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে ৩৫ করে ৭০ নম্বর, বাংলাদেশ বিষয়াবলীতে ৩০, আন্তর্জাতিক বিষয়বলীতে ২০, ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ১০ নম্বর, সাধারণ বিজ্ঞানে ১৫, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি ১৫, গাণিতিক যুক্তি ১৫, মানসিক দক্ষতা ১৫ এবং নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন বিষয়ে ১০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।
প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষার প্রস্তুতি : বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকে পড়ে আসা পাঠ্যবইয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। একইভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের বইগুলো থেকে গাণিতিক যুক্তি, সাধারণ বিজ্ঞান, ভূগোলসহ অন্যান্য বিষয়েও জানা যাবে। আর সাধারণ জ্ঞানে দক্ষতা বাড়াতে দৈনিক পত্রিকা পড়ার বিকল্প নেই। এছাড়াও প্রতিদিন পত্রিকা পড়ার অভ্যাস আপনাকে বিসিএসে নানাভাবে সহায়তা করবে।
