বিসিএস কেন ম্যানিয়া? বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েটরা কেন বিসিএসের দিকে ঝুঁকছে? বিসিএস কেন প্রয়োজন? কেন প্রয়োজন নয়? বিসিএস দিয়েই কি সব গ্রাজুয়েটের প্রত্যাশা পূরণ হয়? বিসিএস কি একমাত্র এ্যাইম ইন লাইফ হওয়া উচিত?
উচ্চশিক্ষার প্রত্যক্ষ প্রতিফলন কোথায় কাজে আসে? আজ এদেশের লাখো তরুণের হৃদয়ের প্রশ্ন এগুলো।




আমার একজন শিক্ষক ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক থেকে মাস্টার্স করেছিলেন। এখন ইংল্যন্ডেই পিএইচডি করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার পর স্যার যখন গ্রামের বাড়িতে গেলেন, তখন আশেপাশের সবাই জিজ্ঞেস করল, “তুমি নাকি মাস্টারি চাকরি পাইছ বাবা?”
– হ্যাঁ।




– তো কোন কলেজে?
– আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছি।
– আরে, বুঝলাম তো, কোন কলেজে?




তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা বোঝেন নাই। জিজ্ঞেস করলেন কোন কলেজ! আবার জিজ্ঞেস করলেন,
– আর তুমি কি বিসিএস পরীক্ষা দিছিলা? পাশের গ্রামের ছেলেটা তো এএসপি হইয়া গেছে বিসিএস দিয়া, তুমি দিছো না কেন?
স্যারের কথা বন্ধ হয়ে গেল।




স্যারের বন্ধু, একই সাথে পড়াশোনা করে তিনি হয়ে গেলেন পুলিশের কর্মকর্তা। আর সাধারণত সবাই কর্মকর্তাকে শিক্ষকের চেয়ে বেশি বিশেষ মর্যাদা দিয়ে থাকে।
রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার জন্য সরকারি কর্মকমিশন ( পিএসসি) কর্তৃক প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। এই প্রথম শ্রেণীর গেজেট কর্মকর্তা বা বিসিএস ক্যাডার হওয়া বাংলাদেশে সর্বোচ্চ চাকরি হিসেবে পরিচিত। তাই আমাদের দেশে বিসিএস এর অর্থ হল- সর্বোচ্চ সামাজিক মর্যাদা আর ক্ষমতার অধিকারী হওয়া।




রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য ব্যুরোক্র্যাসি আবশ্যক, তেমনিভাবে আবশ্যক বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা, গবেষণা, দক্ষ ও সৎ রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক সমালোচক, বিজ্ঞানী, লেখক, দার্শনিক ইত্যাদি।
এবার আসি বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে।