এটি এমন একটি প্রেম যা আপনাকে হয় ক্যাডার বানাবে; না হয় অসীম ধৈর্যশীল বানিয়ে কখন যে চাকরির বয়স শেষ করে দিবে টের -ই পাবেন না । তাছাড়া প্রিয়জনকে হারানো , আশে পাশের মানুষের বিষাদময় খোঁটা জীবনকে এতটায় বিষিয়ে তুলবে যে আত্মহত্যা মনে হবে আসল পথ!সামাজিকতা , সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোকে ভুলে যেতে হয় , ক্যাডার পাওয়া প্রিয় বন্ধুটির ফোন ধরতে কষ্ট হয় , রুম থেকে বের হয়ে পরিচিত কাউকে দেখেই মাথাটা নিচু করে ছলনা করে পাশ কাটিয়ে দ্রুত পথ পার হতে হয়




এমনকি একবার রিটেনের ৬টা পরীক্ষা দেওয়া আর একমাস জেলখানায় থাকা একই কথা ।তাহলে পুরা প্রস্তুতিটা কতটা যন্ত্রণাদায়ক বুঝে নিন! তবু মানুষ স্বপ্ন দেখে, বিসিএসের স্বপ্ন ! একটা ক্যাডার পাওয়ার স্বপ্ন । এপথে প্রেরণা দেয় কিছু ভালো বন্ধু, ভাইয়ের ‘এবার হবে চিন্তা করিস না




.আজ ৪০তমের সার্কুলার হলো । খবর টা যখন পেলাম তখন ঈদের চাঁদ উঠলে যেমন শিশু কিশোরদের মনে আনন্দের বন্যা বয়ে যায় , তেমনি চোখের কোণে , ঠোঁটের মধ্যে হাসির ফোয়ারা বয়ে গেছে । আবার নতুন স্বপ্ন বাঁধা ।থমকে থাকা জীবনটা যেন নতুন জীবন ফিরে পেল । শুরু হলো আরেকটি যুদ্ধ , মেধার যুদ্ধ ! মনে হলো এটা ১ম সার্কুলার ! অথচ এর আগে ৫ বার বিসিএস দিলাম ! কতবার যে বাপকে , ভাইয়ের ফোনে ফুঁফিয়ে ফুঁফিয়ে , হাউমাউ করে কেঁদেছি , কাঁদিয়েছি এই বলে যে পরীক্ষা মনমতো হয়নি ।




এত রাত জাগা , এত এত পরিশ্রম !কখনোই মনে হয়নি ক্লান্ত হয়েছি ,আউড অফ ডেটে পরিণত হয়েছি। কখনোই মনে হয়নি আমার দ্বারা হবে না । বরং প্রতিবার ব্যর্থতার পর আবার নতুন করে শুরু করেছি ! মনে হয়েছে এই এই ভুলগুলো সংশোধন করলে এবার বুঝি হয়ে যাবে !মানুষ তার স্বপ্নকে নিয়ে কিভাবে একাকী দীর্ঘদিন বন্ধুর পথে চলতে ও বেঁচে থাকে তা বুঝেছি হাড়ে হাড়ে ! গত ৫টা বিসিএসে কত স্মৃতি মানস পটে ভেসে ওঠে । কখনো রাঙ্গায় , কখনো কাঁদায় ।কতজনকে ক্যাডার বানিয়েছি ! ফেসবুকের টাইমলাইনে শত শত সুপারিশ প্রাপ্তের , গেজেটের ‘আলহামদুলিল্লাহ’ দেখে চোখের জল নাকের পানি এক করেছি, বালিশ ভিজিয়েছি তার ইয়ত্তা নেই! কিন্তু দমে যাইনি কখনোই ! আবার যুদ্ধ শুরু , মেধার যুদ্ধ !