আজ (৩০ জুলাই) কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতার শুভ জন্মদিন। তবে তার পুরোনাম ফরিদা আক্তার পপি। রূপালি পর্দায় ববিতা নামেই পরিচিত লাভ করেন। সত্তর ও আশির দশকের তুমুল জনপ্রিয় এই নায়িকা ক্যারিয়ারে ২৫০ টির বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
অভিনয়ে এখন নিয়মিত না হলেও মাঝে মাঝে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখতে পাওয়া যায় তাকে। নিপুণ অভিনয়ের মাধ্যমে যে ভক্ত তিনি তৈরি করেছেন যুগ যুগ ধরে তারাই শুভেচ্ছায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন নানা ধরণের মন্তব্য করে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্য তারকারা ছবি পোস্ট শুভেচ্ছা বার্তা দিচ্ছেন।
ববিতা বলেন, বরাবরের মতো মা-ছেলে মিলে এবার সুন্দর সময় কাটবে। ছেলে আমার এখন অনেক বড় হয়েছে। ও তো সারপ্রাইজ প্ল্যান করাও শিখেছে। তাই বলতে পারি, প্রতিবছরের মতো এবারও আমার জন্য কিছু একটা সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে। এখন দেখার বিষয় কী সেটা।
দিনটি কীভাবে কাটানোর পরিকল্পনা করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সত্যি বলতে কি জন্মদিন নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা কখনও করিনি। ঢাকায় থাকলে কাটে একরকম, কানাডায় এলে কাটে অন্যরকম। কারণ ছেলে তার মায়ের জন্য নানা কিছু করতে চায়। দিনের বেলা ঘোরাঘুরির পাশাপাশি রাতে থাকে ওর স্পেশাল ডিনার।
কয়েক বছর ধরে ডিসিআইআইয়ের [ডিসট্রেসড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল] শুভেচ্ছাদূত হওয়ায় আমার জন্মদিনে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা আসত। তাদের নিজ হাতে রান্না করে খাওয়াতাম। ওরা আমাকে গান শোনাত, নেচে দেখাত, কাগজ দিয়ে ফুল, ফলসহ নানা ধরনের জিনিসপত্র তৈরি করে আমায় দিত। পাশাপাশি আমার জন্য নানা ধরনের উপহার আনত। এবার ওদের মিস করব। এ ছাড়া চলচ্চিত্রের আমার অনুজ অনেকে বাসায় আসত, তাদেরও ভীষণভাবে মিস করব।
জন্মদিন আমার কাছে শুধু আনন্দের তা নয়, ভাবনারও। কারণ আরও একটি বছর জীবন থেকে পার হয়ে গেল। তার পরও বলতে হয়, সবার দোয়ায় ভালো আছি। সুস্থ আছি। এটাই আনন্দের। জীবনে যা চেয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি। বিশ্বের বড় বড় চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করেছি। নানান সম্মাননা পেয়েছি। এগুলোর চেয়ে সবচেয়ে বেশি যা পেয়েছি, তা হলো ভালোবাসা। ভক্তদের এত ভালোবাসার যোগ্য আমি না। তার পরও পেয়েছি। এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে।
অনিক আমার হাতে বানানো যে কোনো আচার খুব পছন্দ করে। তাই প্রায়ই ওর জন্য নানা ধরনের আচার বানাই। এবার আমার গুলশানের বাসার ছাদবাগানে লাগানো গাছের আম দিয়ে আচার বানিয়েছিলাম, সেটাই নিয়ে এসেছি।
আমার দুই ভাই থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। তাঁদের ছেলেমেয়েরাও আছে। অনিকের কাছে কয়েকটা দিন থাকার পর ভাইদের ওখানে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। সেখানে কিছুদিন ঘুরেফিরে আবার ছেলের কাছে ফিরে যাব। এরপর মা-ছেলে মিলে ঘোরাঘুরি শেষ হলেই ঢাকায় ফিরব। সত্যি বলতে কি, খুব অল্প বয়সে চলচ্চিত্রে এসেছি, অনেক শখ পূরণ হয়নি। এখন হাতে যতটুকু সময়, সেসময়ে চেষ্টা করব অপূর্ণ ইচ্ছাগুলো পূরণ করার। সবাই আমার আর আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।
আমি অভিনয়ের মানুষ। তাই অভিনয় থেকে দূরে থাকা কঠিন। সব সময় ভালো চরিত্রের অপেক্ষায় থাকি। কিন্তু আমাকে কাজে লাগানো যায়- এ রকম গল্প ও চরিত্র নিয়ে নির্মাতারা ভাবছেন না। ক্যারিয়ারের এই সময়ে গড়পড়তা কাজে নিজেকে জড়ানোর ইচ্ছা নেই। যেজন্য চলচ্চিত্রে কাজ করা হচ্ছে না। জুতসই গল্প ও চরিত্র পেলে অবশ্যই চলচ্চিত্রে ফেরার ইচ্ছা রয়েছে।